Sajek Travel Group
Sajek Travel Group
Adventure Travel

যাদুকাটা নদী: সীমান্তঘেঁষা এক প্রাকৃতিক বিস্ময়

06/07/2025

যাদুকাটা নদী: সীমান্তঘেঁষা এক প্রাকৃতিক বিস্ময়

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মোড়ানো এক নদীর নাম যাদুকাটা। এটি বাংলাদেশ-ভারতের সীমান্তঘেঁষা একটি আন্তঃসীমান্ত নদী, যা সুনামগঞ্জ জেলার বিশ্বম্ভরপুর ও তাহিরপুর উপজেলা দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। ভারতের খাসিয়া জৈন্তিয়া পাহাড় থেকে উৎপত্তি হয়ে নদীটি বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে এবং নয়া সুরমা নদীতে মিলিত হয়েছে। নদীটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৩৭ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ৫৭ মিটার এবং গভীরতা মাত্র ৮ মিটার। সর্পিলাকার এই নদী শুধুমাত্র প্রাকৃতিক দিক থেকে নয়, ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক দিক থেকেও সমৃদ্ধ।

ঐতিহাসিক নাম ও কাহিনি

যাদুকাটা নদীর আদি নাম ছিল রেণুকা। প্রচলিত কাহিনি অনুসারে, এক গৃহবধূ তার সন্তান “যাদু”কে কোলে নিয়ে মাছ কাটছিলেন এবং অসাবধানতাবশত সন্তানকে কেটে ফেলেন। সেই থেকেই নদীটির নাম হয় যাদুকাটা। এই কাহিনি আজও মানুষের মুখে মুখে ফেরে, এবং নদীটিকে ঘিরে গড়ে উঠেছে নানা লোককাহিনি ও ধর্মীয় আচার।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও দর্শনীয় স্থান

নদীর দুই পাড়েই দেখা যায় অপরূপ দৃশ্য—এক পাশে সবুজে ঢাকা বারেক টিলা, অন্য পাশে ভারতের মেঘালয় পাহাড়। নদীর স্বচ্ছ জল, পাহাড়ের সবুজ রূপ আর নীল আকাশের মিলন যেন এক জীবন্ত চিত্রকর্ম। এখানে রয়েছে শাহ্ আরেফিন আউলিয়ার আস্তানা, হিন্দুদের তীর্থস্থান এবং বিখ্যাত শিমুল বাগানও। বর্ষাকালে নদীটি আরও রূপময় হয়ে ওঠে। তখন হাউজবোট “বাতান”-এ চড়ে হাওরভ্রমণের এক অতুলনীয় অভিজ্ঞতা নেওয়া যায়।

ভ্রমণ ও যাতায়াত ব্যবস্থা

ঢাকা থেকে সরাসরি বাসে বা সিলেট হয়ে ট্রেন/বিমানে সহজেই যাওয়া যায় সুনামগঞ্জে। সেখান থেকে লেগুনা, সিএনজি বা রিজার্ভ বোটে যাদুকাটা নদীতে যাওয়া যায়। বর্ষায় হাউজবোট রিজার্ভ করে পুরো টাঙ্গুয়ার হাওর ঘুরে দেখা সম্ভব।

উপসংহার

যাদুকাটা নদী শুধু একটি জলধারা নয়, বরং এটি সীমান্তে অবস্থিত এক অপরূপ প্রাকৃতিক স্বর্গ। নদীর প্রতিটি বাঁক, পাড় ও গল্প যেন প্রকৃতির এক নিঃশব্দ কবিতা।

 

Share

Your Travel Journey Starts Here

Sign up and we'll send the best deals to you